পশ্চিমের বাড়ীর ঠাকুর

নারারণ ঠাকুর হইতে ৪র্থ পুরুষ বীরেশ্বর ন্যায়ালঙ্কার ও তাঁহার ধারার জ্যেষ্ঠানুক্রমে পরিচয়। ইঁহারা পশ্চিমের বাড়ীর ঠাকুর বলিয়া অভিহিত।

মূল পুরুষ বীরেশ্বর ন্যায়ালঙ্কার


রাশি নাম রঘুদেব


ইনি চন্দ্রশেখর ন্যায়বাচস্পতি ঠাকুরের ২য় পুত্র। বৃহস্পতি তুল্য ইঁহার সাত পুত্র। ইনি ব্রাহ্মণ্যে বিদ্যাবত্তায় ও ভাস্করপ্রতিমরূপে সাক্ষাৎ ঋষি ছিলেন। ইঁহার হৃদয় বড়ই স্নেহপ্রবণ ছিল, দান-শৌণ্ডীর্য্যও ইঁহার অতুলনীয়। সাত পুত্র আর দুই পিতৃহীন বালক ভ্রাতুষ্পুত্র ইঁহার হৃদয়ের গ্রন্থি ছিল। কিন্তু পুত্রেরা সকলেই উপযুক্ত হওয়ায় তাহাদের জন্য তাঁহার তত চিন্তা ছিল ন, চিন্তা ছিল বালক ভাইপো দুইটীর জন্য। কি করিয়া উহাদিগকে সুখী করিবেন, কি করিয়া স্বর্গগত জ্যেষ্ঠ ভ্রাতার বংশধর দুটিকে স্বাবলম্বন করাইবেন তাহাই তাঁহার মনের একমাত্র চিন্তা ছিল। ভাইপো দুইটিও তাঁহার বড় অনুগত, জ্যেষ্ঠ ভ্রাতৃবধূও ঐ অত বড় মর্য্যাদাপন্ন দেবরের শ্রীমান্‌ সংসারে মাতার মত গৃহ কর্ত্রী। একদিন একটা ব্যাপার ঘটিয়া গেল। বীরেশ্বর সন্ধ্যাহ্ণিক করিতে বসিয়াছেন আর কে জানে কি এক মনোভাবের প্ররোচনায় মাতৃসম্মাননীয়া ভাতৃজায়া আসিয়া লজ্জামৃদুলস্বরে বলিলেন, “আপনার ভাইপো দুটির জন্য কি উপায় করিতেছেন।” বিধির বিধান, সেই কথাতেই ভ্রাতুষ্পুত্রদ্বয়ের প্রতি বীরেশ্বরের প্রাণের অনাবিল স্নেহ আসিয়া বীরেশ্বরকে আচ্ছন্ন করিয়া ফেলিল, তিনি আর কোন দিক্‌ না দেখিয়া তৎক্ষণাৎ বলিয়া উঠিলেন, “উপায়! উপায় আর অন্য কি মা! আপনার কাছে বলিতেছি যে আজ হইতে আমার বাণেশ্বর ও রাঘবরাম আমার পৈতৃক ও আজ পর্য্যন্ত স্বোপার্জিত যা কিছু সম্পত্তি সকলেরই অধিকারী হইল।” ভাতৃজায়া স্তম্ভিত হইয়া গেলেন, বলিলেন, “অ্যাঁ কি করিলাম!” বীরেশ্বর বলিলেন, “না কিছু না মা, কিছুই অন্যায় করেন নি, অনেক দিনের পর আজ আমার প্রাণের একটা মস্ত বোঝা নামিয়া গেল, আমি সর্ব্বদাই ভাবিতাম ভাইপোদের কি হইবে, আজি বড় শুভদিন, আজ আমি নিশ্চিন্ত হইলাম আমার বাসনা পূর্ণ হইল। ভাতৃজায়া দেবরের মহত্বে তাঁহকে দেবতা ভাবিয়া চুপ করিয়া রহিলেন। এই মহাপ্রাণতার শব্দ ছড়াইয়া পড়িল, ছেলেরা শুনিল কিন্তু কিছু বলিতে সাহস করিল না। সেই দিনই বীরেশ্বর পৈতৃক বাস্তু ছাড়িয়া সানন্দচিত্তে দানটিকে পাকা করিবার জন্য হুগলীর সন্নিকটে বাঁশবেড়িয়ায় গিয়া বাসের সঙ্কল্প করিলেন। কিন্তু উহা আর ঘটিল না, এই সংবাদে ভাটপাড়ার পরমাত্মীয় ও প্রথম শিষ্য হালদার ভূস্বামী বড়ই কাতর হন ও তিনি স্থানান্তরে যাইলে ভাটপাড়া শ্রীহীন হইয়া যাইবে এই কথা বুঝাইয়া বিশেষ অনুনয় বিনয় সহকারে তাঁহার সেই সঙ্কল্প ত্যাগ করান। ব্যবস্থা হয় এই ভাটপাড়াতেই, নূতন জমি, নূতন বাড়ী নির্ম্মিত হইলে তিনি তথায় বাস করিবেন। দান দানই থাকিবে। বীরেশ্বর স্বীকৃত হইলে তাঁহার পৈতৃক বাড়ীর পশ্চিমাংশে হালদার ভূস্বামী আবার নূতন করিয়া নিষ্কর ব্রহ্মত্র জমি দান করেন ও তথায় বাড়ী নির্ম্মাণ আরম্ভ হয়। ধন্য হাল্দার বংশ! কি দানশূরতা! কি গুরুভক্তি! গুরু শিষ্যের প্রাণ একতারে গাঁথা! বাড়ী নির্ম্মাণ না হওয়া পর্য্যন্ত তিনি তাঁহার প্রিয় ভ্রাতুষ্পুত্রদের বাড়ীতেই থাকেন ভ্রাতৃজায়া তখনও সেই মাতার মত তাঁহাকে আদর যত্ন করিতে থাকেন। তুমি তখন কি এক অপূর্ব্ব দেবভাব দিয়া এ বংশের হালদার বংশের মনোভাব গঠন করিয়াছিলে! এখনকার এই বর্ত্তমান-রাক্ষসভাবময় এই বর্ত্তমান তাহা বুঝিয়া উঠিতে পারিবে না। না পারুক শান্তি এই যে আমরা যদি কখনও অবকাশ মত অতীতের দিকে মনশ্চক্ষে চাহিয়া দেখি, দেখিতে পাইব আমরা দেববংশে উদ্ভূত। হয়তো তখন ক্ষণকালের জন্যও পবিত্রচিত্ত হইব ও রাগ দ্বেষ আত্মাভিমান ভুলিব। ইহাই এই বংশ পরিচর জানিয়া লাভ। এই নূতন বাড়ী যখন প্রস্তুত হয় তখন শিশ্যদিগের কাছে গুরু ঠাকুরদের দুটী বাড়ী হইল, পুরাতনটি পূর্ব্বের দিকে, নূতনটি পশ্চিম দিকে। উভয় বাড়ীর জ্ঞাপকতো একটা সঙ্কেত চাই, আপনিই উহা উদ্ভূত হইল। স্বাভাবিক সঙ্কেত পশ্চিমের বাটীর ঠাকুর, ও পূর্ব্বের বাটীর ঠাকুর। খুল্লতাত বীরেশ্বরের ধারা হইলেন পশ্চিমের বাটীর ঠাকুর ও ভ্রাতুষ্পুত্র বাণেশ্বরের ধারা হইলেন পূবের বাটীর ঠাকুর। ঐ নির্দ্দেশ আজও চলিয়া আসিতেছে। নির্দ্দেশ তো চলিয়া আসিতেছে, সেই মনোভাব চলিয়া আসিবে না কি? ভগবান করুন আমাদের এই বংশ-পরিচয় গ্রন্থখানি যেন আমাদের সেই পবিত্র পূর্ব্ব স্মৃতি জগাইয়া দেয়। বীরেশ্বরের সম্বন্ধে লিখিবার অনেক আছে, গ্রন্থ গৌরব ভয়ে নিম্নে সামান্য মাত্র ঘটনা লিখিত হইল। এই বংশের মূল পুরুষ গদাধর যখন কান্যকুব্জ হইতে বাঙ্গালায় আসেন তখন বাঙ্গালা তাঁহার কয়েক শত বৎসর পূর্ব্বে আগত কনোজিয়া পঞ্চ ব্রাহ্মণের ধারায় সমাদৃত। তাঁহারা উভয় শ্রেণীতে বিভক্ত, রাঢ়ী ও বারেন্দ্র। তাঁহাদের শ্রেণী বিভাগ তখন বদ্ধমূল হইয়া গিয়াছে, এক শ্রেণি অপর শ্রেণীর সহিত আদান প্রদান করেন না, এমন কি আহার ও নিয়মবদ্ধ। ব্রাহ্মণের যে সনাতন বৈদিক উপাধি, যে উপাধি লইয়া তাঁহাদের পূর্ব্ব পুরুষপঞ্চ আসিয়াছিলেন (পঞ্চ বৈদিকা ব্রাহ্মণা আসন্‌ ইতি কুলপঞ্জিকা) উহাও তাঁহাদের নাই, রাঢ়ী ব্রাহ্মণ ও বারেন্দ্র ব্রাহ্মণ বলিয়া তাঁহারা বিখ্যাত। সেই সময়ে যে সকল ব্রাহ্মণ কান্যকুব্জ হইতে বাঙ্গালায় আসেন তাঁহারা তাঁহাদের সেই সনাতন উপাধি বৈদিক নামেই অভিহিত হয়েন, ও পশ্চিমদেশ হইতে আসেন বলিয়া “পাশ্চাত্য” – এই একটি শব্দ তাঁহাদের উপাধির সহিত সংঘুক্ত হয়। (১) ঐ তাৎকালিক নিয়মাধীনে গদাধর ও তদ্বংশীরেরা পাশ্চাত্য বৈদিক শ্রেণীতে বিভক্ত। এই পাশ্চাত্য বৈদিক বাশিষ্ঠ বীরেশ্বর পাণ্ডিত্য ধর্ম্মানুরাগ ও সদাচারে তাৎকালিক ব্রাহ্মণসমাজে বড়ই প্রতিষ্ঠিত হইয়াছিলেন। একে তো ইনি সিদ্ধ পুরুষ নারারণ ঠাকুরের প্রপৌত্র, তাহার উপর তাঁহার নিজের ঐ সকল গুণ, চারিদিক্ হইতে প্রধান প্রধান রাঢ়ী …বারেন্দ্র প্রভৃতি ব্রাহ্মণসন্তানগণ তাঁহার শিষ্যত্ত্ব স্বীকার করিতে লাগিলেন। ব্রাহ্মণসমাজে একটা সাড়া পড়িয়া গেল। ব্রাহ্মণ্যে, পাণ্ডিত্যে ও আভিজাত্যে গরীয়ান্‌ রাঢ়ী বারেন্দ্র সমাজ পাশ্চাত্য বৈদিক বীরেশ্বরের দিকে দৃষ্টিপাত করিল। (১) দক্ষিণ দেশ হইতে যে ব্রাহ্মণেরা আসেন তাঁহাদের দাক্ষিণাত্য বৈদিক সংজ্ঞা। ভাটপাড়ার নিকটবর্ত্তী ব্রাহ্মণজনপদ কামালপুর, ভট্চার্য্যিকামালপুর বলিয়া যাহার বিখ্যাতি, তখন একটা বড় পণ্ডিতের স্থান। বেদান্তের প্রসিদ্ধ গ্রন্থ চিৎসুখীর প্রসিদ্ধ টীকাকার মধুসূদন তর্কালঙ্কার ঐ জনপদের অন্যতম পণ্ডিত। ইঁহারা সব একমত হইয়া মনে-মনে একটা ভাব পোষণ করিয়া নদীয়ার মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্রকে দিয়া এক বিরাট পণ্ডিতসভা আহ্বান করান। ভাটপাড়ায় বীরেশ্বরের নিকট নিমন্ত্রণ পত্র আসিল। বীরেশ্বরাবতার বীরেশ্বর বড়ই সন্তুষ্ট হইলেন। পুত্রভ্রাতুষ্পুত্রগণে পরিবৃত হ্ইয়া কতিপয় শিষ্য সমভিব্যাহারে রাজধানীতে উপস্থিত হইলেন। পরদিন প্রাতঃকালে সভা। কামালপুরওয়ালারা পূর্ব্ব হইতেই তথায় কোমর বাঁধিয়া আছেন। প্রাতঃস্নান করিয়া কোশাকুশি হস্তে নামাবলীগাত্রে তপ্তকাঞ্চনবর্ণাভ বীরেশ্বরাপ্রনী ঠাকুরকুল সভায় প্রবেশ করিতেছেন। যেন ঠিক সেই অতীতের এক অপূর্ব্ব দৃশ্যের পুনরবতার। বারাণসীর ঋষিপত্তণে বুদ্ধদেব প্রবেশ করিতেছেন আর তাঁহাকে অসম্মান করিবার করিবার জন্য তাঁহারই পঞ্চশিষ্যপ্রমুখ ব্রাহ্মণগণ কোমর বাঁধিয়া আছেন। ঘটিলও সেই একই সমাধান। সভাস্থ সকালে চমকাইয়া উঠিল, এ কি মূর্ত্তি! এ কি ব্রহ্মণ্যদেব সাক্ষাৎ আসিতেছেন! সব ভুলিয়া গেল, অত পরামর্শ সব ভাষিয়া গেল। বিস্ময়ে বিহ্বল হইয়া সমগ্র সভা একসঙ্গে দণ্ডায়মান হইল। রাজা কৃষ্ণচন্দ্র অগ্রসর হইয়া তাঁহাদিগকে সাদরে অভ্যর্থনা করিলেন। কামালপুরওয়ালারা ম্রিয়মাণ, স্ব-স্ব আসনে গিয়া উপবেশন করিল। তাহার পর বিচার হইল। ক্রমে তাঁহারা রূপের সঙ্গে সঙ্গে ব্রাহ্মণ্য সদাচার ও সর্ব্বশাস্ত্রে অসীম পাণ্ডিত্যের পরিচয় পাইয়া সভা চমতকৃত হইল ও কামালপুরের অনেক ব্রাহ্মণপণ্ডিত তাঁহার শিশ্যত্ব স্বীকার করিলেন। সেদিন চলিয়া গিয়াছে, কিন্তু ভাটপাড়া কামালপুরে সে শুভ সম্বন্ধ আজও রহিয়াছে, সেই গুরু-শিষ্য সম্বন্ধ পরস্পর বংশানুক্রমে আজিও বর্ত্তমান। মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্রও তাঁহার মর্য্যাদার অনুরূপ বীরেশ্বরকে আনরপুর প্রভৃতি কয়েকটি স্থান ব্রহ্মত্ররূপে দান করেন। বাঙ্গালা ১১৩৪ সালে বীরেশ্বর তাঁহার নিজ বাস্তুতে দুইটি শিব ও শিবমন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। মন্দির দুটি অদ্যাপি উন্নতশিরে তাঁহার কীর্ত্তি খ্যাপন করিতেছে। ২৪ পরগণা পানিহাটীতে তিনি ঐরূপ শিব ও শিবমন্দিরদ্বয় প্রতিষ্ঠা করেন এবং উভয় স্থানেই পূজার জন্য বৃত্তি স্থির করিয়া দেন। পানিহাটীর মন্দির দুটি সংস্কারাভাবে ভগ্নপ্রায়। ইঁহার আর এক বিশাল কীর্ত্তি আধহাটার ভলাশর। আধহাটা ২৪ পরগণার অন্তর্গত একটি গণ্ডগ্রাম। কোন সময়ে ঠাকুর সেই গ্রামের ভিতর দিয়া কোন শিষ্যালয়ে যান এবং লক্ষ্য করেন জলাভাবে গ্রামবাসীর বড় কষ্ট। মহাপ্রাণের প্রাণে উহা বাজিয়া উঠে, গ্রামে কেহ সম্পন্ন ব্যক্তি আছে কিনা জানিতে চাহিলে জানিতে পারেন যে এক ঘর গোয়ালা শ্রীমান্‌ আছে। ঠাকুর তাহাকে একটি পুকুর কাটাইয়া দিতে বলিলেন কিন্তু লোকটি তাঁহার কথা না রাখায় ঠাকুর নিজেই একটি বৃহৎ পুষ্করিণী কাটাইয়া দেন। ঐ পুকুরের নাম হইল ঠাকুর পুকুর এবং উহা আজও গ্রামবাসীর তৃষ্ণা নিবারণ করিতেছে। ইনি বাকসিদ্ধ ছিলেন। আধহাটায় তাঁহার পুকুর হইয়া গেলে সেই গোয়ালা ঈর্ষ্যা করিয়া আবার একটা প্রতিদ্বন্দী পুকুর কাটায়। লোকটা হতভাগ্য, কাহার সহিত প্রতিদ্বন্দীতা করিতেছে বুঝিল না। তাহার সেই তামস কার্য্য বীরেশ্বরের বাক্যে বৃথাকার্য্যে পরিণত হইয়া গেল, উহাতে পানপযোগী জল হইল না কেবল ভেকগণের আশ্রয় হইল। তাঁহার আর একটা মনঃসিদ্ধির কথা শুনা যায়। অসময়ে তাঁহার একবার পাকা আম খাইতে ইচ্ছা হইয়াছিল। সে তো আর একাল নহে, তখনকার কালে উহা একেবারেই অসম্ভব ব্যাপার, শিষ্য ও পুত্রগণ চিন্তিত হইলেন কোথায় পাইব, ঠাকুর এমন ইচ্ছা করিলেন কেন? কিন্তু তাঁহাদের চিন্তা আর করিতে হইলনা, সত্য সত্যই এক শিষ্য একটি সুপক্ক আম্র লইয়া ঠাকুরকে আসিয়া খাওয়াইয়া গেল। এ যেন সেই ঋষিদের মত মানসী সিদ্ধি! ৯০ বৎসর বয়সে তাঁহার গঙ্গালাভ হয়। মৃত দেহ লইয়া এখন একটা শোভাযাত্রার কাল আসিয়াছে। মৃত দেহ লইয়া এখন একটা শোভাযাত্রার কাল আসিয়াছে। তখনও যে না ছিল তা নয়, তখনও ছিল, তবে তাহার প্রকার ছিল স্বতন্ত্র। মুমূর্ষু বীরেশ্বরকে যখন গঙ্গাতীরস্থ করা হয় তখন তাঁহার শোকে তখনকার সমগ্র ভাটপাড়া তাঁহার সহযাত্রী হইয়াছিল। ভাটপাড়া চুঁচুড়ার পূর্ব্ব পারে। শুনা যায় সেইদিন সেই সময়ে নবাব সিরাজউদ্দৌলা কলিকাতা অবরোধ করিয়া ফিরিবার পথে চুঁচুড়ায় অবস্থান করেন এবং পরপারে ঐ বিপুল লোকসমাগমের কারণ জিজ্ঞাসু হইয়া জানিতে পারেন ভাটপাড়ার গুরুঠাকুর বংশের প্রথিতনামা এক মহাত্মা গঙ্গায় দেহত্যাগ করিতে আসিয়াছেন। কিম্বদন্তী নিতান্ত অমূলক নহে বীরেশ্বর ঐ সব ঘটনার সমসাময়িকই বটেন।